back to top
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫
HomeProductivityWork Efficiencyটাইম ম্যানেজমেন্টের ৮টি ভুল ধারণা, যা আপনাকে পিছিয়ে দিচ্ছে!

টাইম ম্যানেজমেন্টের ৮টি ভুল ধারণা, যা আপনাকে পিছিয়ে দিচ্ছে!

ছাত্রজীবনে বহুবার “সময়ের মূল্য” এর রচনা লিখতে গিয়ে যতটা না সময়ের মূল্য বোঝা যায়, তার চেয়ে বেশি বোঝা যায় কর্মজীবনে প্রবেশ করলে। এত সব কাজ এবং এত কম সময়। কর্মব্যস্ত জীবনে টাইম ম্যানেজমেন্ট অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে, এই বিষয়টি নিয়ে এখনো নানা ভুল ধারণা বিদ্যমান। একই সময়ে একাধিক কাজ করা থেকে শুরু করে অন্য কারো জীবনের ছাঁচে নিজের সময়ের পরিকল্পনা করা – সবই এই ভুল ধারণাগুলোর মধ্যে পরে। আজ আমরা টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ব্যপারে ৮টি ভুল ধারণা নিয়ে আলোচনা করবো।

১। অল্প সময়ে যত বেশি সম্ভব তত কাজ করতে হবেঃ

সময় বাঁচানোর জন্য অল্প সময়ে অধিক কাজ করতে গিয়ে কাজের দক্ষতা কমে যায় অনেক সময়। দ্রুত কাজ করতে গিয়ে ভুল করার প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই দেখা যায় সময় বাঁচাতে গিয়ে হীতে  বিপরীত হয় এবং একই কাজ পুনরায় করতে গিয়ে আরো সময় নষ্ট হয়।

২। একই সাথে অনেক কাজ করলে সময় বাঁচানো যাবেঃ

মাল্টিটাস্কিং আজকালকার যুগে গুণ হিসেবে ধরা হলেও, শৈল্পিক কোনো কাজ করতে গেলে কিংবা গভীর মনোযোগ দিয়ে করতে হয় এমন কোন কাজের সময় এটা গুণের চেয়ে দোষেরই বটে। একই সাথে নানা রকমের কাজ করলে কোনোটাই নিপুণতার সাথে করা যায় না। তাই, একই সাথে অনেক কাজ করলে সময় বাঁচানো যাবে এ ধারণা ভুল। 

৩। বিরতিহীন একটানা কাজ করে ফেলাই শ্রেয়ঃ

অনেকেই বিরতিহীন কাজ করে অভ্যস্ত। তবে, বিজ্ঞানীদের মতে বিশ্রাম নিয়ে কাজ করলে কাজের মান ভালো হয় এবং বেশি সময় ধরে কাজ করা যায়। আমেরিকার কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুযায়ী, কাজের মাঝে মাঝে ক্ষুদ্র বিরতি নেয়াতে তাদের কাজের মান ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এটা ছিল ১৯৯৯ সালের একটা গবেষণার পর্যবেক্ষণ। যারা একটানা কাজ করেন, তারা এটা একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন কাজের মাঝে ছোট ছোট ৫-১০ মিনিটের বিরতি নেয়ার এতে কাজে একনিষ্ঠ মনোযোগ আনা সহজ হয়।

৪। একই টাইম ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্যঃ

পৃথিবীতে একেক জন একেক রকম। কারো সাথেই কারো সম্পূর্ণ মিল থাকা সম্ভব নয়। তাই, কোন পরিকল্পনা একজনের জন্য কাজ করলে, তা আপনার জন্যও কাজ করবে এমন কোনো নিয়ম নেই। যত সফল মানুষই হোক না কেন, আপনার জীবনের সাথে না মিললে কোন পরিকল্পনাই আপনার কাজে আসবে না। তাই নিজেকে জানুন, নিজের জন্য সঠিক টাইম ম্যানেজমেন্ট খুঁজে বের করুন।

৫। চেষ্টা করলেই রাতারাতি টাইম ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী হওয়া সম্ভবঃ

একদিনে কোনদিন কেউ বদলাতে পারেনা। তাই, আপনিও যে রাতারাতি জীবনে পরিবর্তন আনতে পারবেন, এ ধারণা ভুল। একনিষ্ঠ চেষ্টা থাকলে অবশ্যই দ্রুততম সময়ে টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ব্যপারে উন্নতি করা সম্ভব। তবে, রাতারাতি পরিবর্তন আশা করা উচিত না। আর, প্রথম প্রথম ভুল হলে বা পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতে ব্যর্থ হলে, নিজের উপর আস্থা হারানো উচিত না। পরবর্তীতে আরও সতর্ক থাকা উচিত এবং চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

৬। টু-ডু লিস্ট লিখে ফেললেই সময় অনুযায়ী চলা যায়ঃ

যারা প্রতিদিনের পরিকল্পনা আগেই লিখে রাখে, তারা লিখেছে বলেই যে কাজ সম্পন্ন করে ফেলবে, এমন কিন্তু নয়। লেখা আর কাজের মধ্যে যে গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি আছে, তা হল – পরিকল্পনা অনুযায়ী চলার দৃঢ়তা। টু-ডু লিস্ট বানালেই হবে না, অবশ্যই তা মেনে চলতে হবে, এবং একটা কাজ বাদ পরে গেলেই পুরো লিস্ট বাদ দিয়ে দেয়া যাবে না। অনেকের মধ্যেই এ ব্যাপারটা থাকে, একটা কাজ হলো না তাহলে আজকের দিন বাদ দিয়ে কালকে থেকে শুরু করবো। এটা কখনোই করা উচিত না। প্রয়োজন পরিকল্পনা অনুযায়ী চলার সংঘবদ্ধতা।

৭। একটা কাজ শেষ না করে কোনোভাবেই অন্য কাজে হাত দেয়া উচিত নাঃ

নানা অনাকাঙ্খিত কারণে যদি কোন কাজ থেমে থাকে সেটার জন্য কখনোই বসে থাকা উচিত না। অনেকে মনে করেন, একটা কাজ শেষ করে আরেকটা শুরু করবো। এটা করলে পরবর্তী কাজগুলোও আটকে যায়। মাল্টিটাস্কিং যেমন কাম্য নয়, তেমনই একটা কাজের জন্য অন্য কাজ থামিয়ে রাখাও টাইম ম্যানেজমেন্টের জন্য ভালো নয়। 

৮। ফোনে কথা বলা, ইমেইল চেক করা, বা সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটকে সময় নষ্টের মূল হিসেবে বিবেচনা করাঃ 

অনেককেই দেখা যায়, ফোন – ইমেইল – সামাজিক নেটোয়ার্কিং সাইটগুলোকে এড়িয়ে চলে কারণ তাদের ধারণা এগুলো সময় নষ্ট করে। এখানে ভেবে দেখার বিষয় হচ্ছে, এগুলোর কোনোটাই আপনার সময় নষ্ট করার ক্ষমতা রাখে না, যদি না আপনি তা চান। ফোন – ইমেইল জীবনের ও কাজের অংশ। এসব নিয়ে বিরক্ত হওয়ার কিছু নেই। আর সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো অনেক ক্ষেত্রেই অনেক কাজের। সময় মেপে, প্রয়োজন অনুযায়ী টেকনলোজি ব্যবহার করতে শিখুন। মাত্রাতরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। আপনি টেকনলোজি ব্যাবহার করুন, টেকুনলোজি যাতে আপনাকে ব্যাবহার না করে। তাহলেই এগুলো সময় নষ্টের কারণ না হয়ে আপনার উন্নতির অংশ হয়ে উঠবে।

উপরের অনেকগুলো ধারণাই আমরা মেনে চলি এবং বরাবরই টাইম ম্যানেজমেন্টে ব্যার্থ হই। একটু সতর্কতার সাথে এগুলো এড়িয়ে চললেই, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সফল জীবন যাপন করতে পারা সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ ম্যাচিওরিটির ৭টি বৈশিষ্ট্য: আপনি কোন দলে পড়েন?

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular