back to top
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০২৫
HomeProductivityPersonal Developmentবয়স বাড়ুক তাতে কী! ৬টি কাজ কখনোই বন্ধ করা উচিত নয়

বয়স বাড়ুক তাতে কী! ৬টি কাজ কখনোই বন্ধ করা উচিত নয়

বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের অনেকের কাজের ধারাও পাল্টে যায়এটা হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ কিশোর বয়সে যেইসব কাজ আমরা করি সেগুলো তরুণ বয়সে করি নাআবার তরুণ বয়সে যা কাজ করি সেগুলো বৃদ্ধ বয়সে করিনাকিন্তু তারপরও কিছু কাজ আছে যা আমাদের কখনই বন্ধ করা উচিত নয়বরং সময়ের সাথে সাথে সেগুলো আরও বেশি করে করা উচিততেমন কিছুই কাজের কথা নিচে দেয়া হলো: :

কখনও স্বপ্ন দেখা বন্ধ করো না:

স্বপ্ন মানুষকে বাঁচতে শেখায়শেখায় নিজের কল্পনাগুলোকে বাস্তবের সুন্দর কিছু গল্পে সাজাতেআর সেই সু্ন্দর গল্পগুলোই হয় পরের প্রজন্মের স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণাকল্পনাহীন মানুষ কখনোই নিজের জীবনকে আনন্দময় করতে পারেনাযে স্বপ্ন দেখে না সে বেঁচে থেকেও মৃতসবাই যদি স্বপ্ন দেখা বাদ দিতো তাহলে আজকের আমাদের জীবনযাপন এতো রঙিন হতো নাস্বপ্নের মৃত্যু হলে আমাদের কল্পনা শক্তিগুলো মহাশূণ্যে হারিয়ে যেতোবিল গেটস্, স্টিব জবস্, মার্ক জাকারবার্গ আরও অনেক স্বপ্নদর্শী মানুষের নাম আজ আমরা জানতাম না যদি তারা স্বপ্ন দেখা বাদ দিতোআমরা একটি স্বাধীন সু্ন্দর দেশ পেতাম না যদি না আমরা সময় স্বপ্ন না দেখতামতাই জীবদ্দশায় কখনোই স্বপ্ন দেখা বাদ দেয়া উচিত নাস্বপ্ন দেখতে হবে এবং স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে পরিণত করতে কাজ করে যেতে হবে। 

” Never stop dreaming. Never stop listening to the music that is inside of you.” – Debasish Mridha

কাউকে ভালোবাসি বলতে কখনও কার্পণ্য করো না:

আমরা অনেকেইভালোবাসি’ শব্দটা শুনলে শুধু প্রেমিকপ্রেমিকার মধ্যকার বিষয়টা চিন্তা করিআমরা যদি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একটু ইতিবাচক করতে পারি তাহলে বুঝতে পারবো এই ভালোবাসি শব্দটির মধ্যে একটি অদৃশ্য গুন আছেযা অন্যদের মধ্যে খুব সহজেই একটি মিষ্টি প্রভাব ফেলতে পারেযেমন আমাদের বাবামা আমাদের জন্য নিজের সাধ্যমতো সবকিছু করেনআমরা যদি তাদের একটা বার শুধু ভালোবাসি বলতে পারি তাহলে তাদের মনের মধ্যে সেটি কতোটা যে প্রভাব ফেলবে সেটি বলে বুঝানো সম্ভব নয়শুধু তাদের মধ্যে নয় নিজেদেরও অনেক ভালো লাগবেএমন ভাবে আমরা প্রতিনিয়ত যাদের সাথে চলাফেরা করি তাদেরও যদি বলি হতো, সেটি কাজ দিয়ে বা অন্য কিছু দিয়ে তাহলে শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্ববোধের পাশাপাশি একে অপরের উপর সম্মানটাও বেড়ে  যাবেএতে করে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো থাকবে এবং একসাথে মন দিয়ে কাজ করে যাওয়ার উদ্যমও পাওয়া যাবে

“Compassion is the heart that never stops loving others. It is like a wellspring that never runs dry.” -Ryuho Okawa

নিজেকে কখনও ছোট করো না:

আমাদের প্রতিযোগিতামূলক জীবনে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী আমরা নিজেরাইনিজের সাথে যদি প্রতিযোগিতা করতে পারি তাহলে সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভবআর যুদ্ধটা যখন নিজের সাথে তখন আমাদের প্রথম কাজ হবে নিজেকে শ্রদ্ধা করা এবং ভালোবাসানিজেকে যদি আমরা শ্রদ্ধা করতে পারি এবং ভালোবাসতে পারি তাহলেই শুধু আমরা নিজের অবস্থান মূল্যটা বুঝবনিজের আত্মবিশ্বাস দিয়ে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভবআর কখনই নিজেকে নিজের কাছে বা অন্য কারো সামনে ছোট করা উচিত নাএতে করে নিজের মনোবল যে কতটুকু ভেঙ্গে পরে তা বলে বুঝানো সম্ভব নানিজেকে ছোট করার প্রভাব যে শুধু মানসিকভাবে থাকে তা কিন্তু নয়, এর প্রভাব কাজ কর্মেও পরিলক্ষিত হয়তাই নিজেকে আমাদের সম্মান করতে হবে

“Self-respect knows no considerations.” – Mahatma Gandhi

সৎ কাজ থেকে কখনও দূরে সরে যেও না:

কাজের মাধ্যমেই আমরা নিজেদেরকে সবার সামনে তুলে ধরিবংশ পরিচয় দিয়ে কখনও কিন্তু সবার মনের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া সম্বভ নাকাজ দিয়েই সবার মন জয় করা সম্ভবআর অবশ্যই সেই কাজটি হতে হবে সৎসৎ মানুষদেরকে সবাই সম্মান তো করেই, বিশ্বাস এবং ভালোবাসাটাও তাঁদের জন্য বরাদ্দ থাকে সবার কাছেআমরা কেউ অমরত্বের সুধা পান করিনিকেউ সারাজীবন বেঁচে থাকবো নাকিন্তু আমাদের সৎ কাজগুলো কিন্তু ঠিকই অমরত্বের সুধায় মিশে থাকবে আজীবনআর সেই সুধা হয়তো আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হবে অনুপ্রেরণার বীজআমরা চেষ্টা করলেই সৎ কাজের পরিসীমা বাড়াতে পারিযেমন আমরা  প্রতিদিন একটি করেও যদি সৎ কাজ করার পরিকল্পনা করি তাহলে প্রতিমাসে সংখ্যাটা কিন্তু তিরিশের কাছে পৌঁছায়যেটি একজনের জন্য যথেষ্টএতে করে মনুষ্যত্ববোধ যেমন ঠিক থাকবে একই সাথে কাজগুলি অন্যের অনুপ্রেরণাও হবে

“The elegance of honesty needs no adornment.” – Marry Browne

বিশ্বাস করা কখনও থামিও না:

বিশ্বাস হতে পারে একে অপরের উপর বিশ্বাস কিংবা আত্মবিশ্বাসএটি একটি অমূল্য হাতিয়ারকারন বিশ্বাস দিয়ে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়পাশাপাশি একে অপরের সাথে একটি শ্রদ্ধামূলক সম্পর্ক বজায় থাকেবিশ্বাস দিয়েই সাফল্যের সিঁড়ি তৈরী হয়যারা নিজেদের বিশ্বাস করে তাদের কাছে কোনো কাজই কঠিন নয়তারা জানে তাদের বিশ্বাস দিয়ে তারা সব কিছু জয় করতে পারবেকোনো কিছু অর্জন করার প্রথম ধাপ হচ্ছে নিজেকে বিশ্বাস করাএটিও মানতে হবে যেনিজেকে দ্বারা সম্ভবসেটি অর্জন করাএটি ছিলো আত্মবিশ্বাসের কথানিজেকে বিশ্বাস করার পাশাপাশি অপর জনকেও বিশ্বাস করতে হবেনিজের সহযোগী উপর এবং তার কাজের উপর আস্থা রাখা লাগবেমনে রাখতে হবে বিশ্বাসেই সম্পর্ক বজায় রাখে। 

“Great things happen to those who don’t stop believing, trying, learning, and being grateful.” – Roy T. Bennett

কখনও শেখা বন্ধ করো না:

শেখার কোনো বয়স লাগে নাআমাদের আশেপাশে যা কিছুই ঘটছে সব কিছু থেকেই শিক্ষা নেয়া উচিতএতে করে জীবনের পরবর্তী সময়ে সেটি অভিজ্ঞতা স্বরূপ কাজ করবেআর শেখার কোনো নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই যে শুধু এইটুকু বিষয়ের উপরে শিখতে হবেসিলেবাসের উপর শিক্ষা নিয়ে ডিগ্রী ঠিকই নেয়া সম্ভব কিন্তু বাস্তব জীবনে সবকিছুর উপর সেটি কতটুকু কাজে লাগানো যাবে এটি নিয়ে অনেকের মধ্যে সন্দেহ আছেআর পাঠ্যপুস্তক এর শিক্ষাই সব নয়যেই শিক্ষা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা যায় না সেটির মূল্য নেইশিক্ষিত হওয়ার চেয়ে স্বশিক্ষিত হওয়াটাই বেশি জরুরিশেখা হতে পারে কোনো স্কিল ডেভেলপমেন্ট। আবার হতে পারে কারো কোনো ভালো কাজ দেখে শিক্ষা নেয়াআবার হতে পারে বার বার ভুল করে শেখাএই পথে অনেক বাধা আসবেইকিন্তু কখনই শেখা থামানো উচিত না। কারণ সবাই ভুল করেই শিখে

“Curiosity is the wick in the candle of learning.” – Willian Arthur Ward

সবশেষে এটুকুই বলা যায় যে বয়স মানুষের শরীরে নয়, বয়স থাকে মানুষের মনেআর এইসব কাজ যদি আমরা বয়স বাড়ার পরও চালিয়ে যেতে পারি তাহলে সেটি হবে নিজের জন্য মঙ্গল এবং পরের জন্য অনুপ্রেরণা। 

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular