back to top
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫
HomeWellbeingFitnessকিডনি রোগের সতর্কবার্তা: এই ৮টি সংকেত অবহেলা করবেন না

কিডনি রোগের সতর্কবার্তা: এই ৮টি সংকেত অবহেলা করবেন না

আমাদের কিডনি শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি বর্জ্য পদার্থ বের করে, শরীরের তরল ভারসাম্য রক্ষা করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে, কিডনির সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝা কঠিন হয় এবং অনেক সময় গুরুতর হওয়ার আগে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় না। তাই প্রাথমিক সংকেতগুলো চেনা জরুরি, যাতে বড় কোনো জটিলতা এড়ানো যায়। নিচে ৮টি লক্ষণ দেওয়া হলো, যা নির্দেশ করতে পারে যে আপনার কিডনি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

১. অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা

যদি যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়ার পরও সবসময় ক্লান্ত বোধ করেন, তবে এটি কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে, যা ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং মনোযোগের ঘাটতি তৈরি করতে পারে। কিডনি রোগের কারণে রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া) হতে পারে, যা আরও বেশি দুর্বলতার কারণ হতে পারে।

২. পা, গোড়ালি ও হাত ফুলে যাওয়া

কিডনি শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল বের করে দেয়। যখন কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, তখন অতিরিক্ত তরল জমে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে পা, গোড়ালি এবং হাতে ফোলাভাব সৃষ্টি হয়। যদি কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই শরীরে ফোলাভাব লক্ষ্য করেন, তবে এটি কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

৩. প্রস্রাবে পরিবর্তন

প্রস্রাবের ধরনে পরিবর্তন হওয়া কিডনি সমস্যার অন্যতম লক্ষণ। সতর্ক হওয়া প্রয়োজন যদি আপনি দেখেন—

  • প্রস্রাবের পরিমাণ বা ঘনত্ব বেড়ে গেছে, বিশেষ করে রাতে
  • প্রস্রাব ফেনাযুক্ত বা বাবলযুক্ত হচ্ছে, যা শরীর থেকে প্রোটিন বের হওয়ার সংকেত
  • প্রস্রাব গাঢ় রঙের বা রক্ত মিশ্রিত হয়ে গেছে
  • প্রস্রাবে ব্যথা বা বাধা সৃষ্টি হচ্ছে

৪. অবিরাম পিঠের ব্যথা

কিডনির সমস্যা হলে কোমরের নিচে বা পাঁজরের নিচের অংশে হালকা বা তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে পারে। যদি একপাশ বা উভয় পাশে ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে এটি কিডনিতে পাথর, সংক্রমণ বা অন্য কোনো গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।

৫. উচ্চ রক্তচাপ

কিডনি শরীরের তরল ও লবণের ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, যা কিডনির আরও ক্ষতি করতে পারে। অস্বাভাবিক উচ্চ রক্তচাপ কিডনির রোগের কারণ ও পরিণতি—উভয়ই হতে পারে।

৬. শ্বাসকষ্ট

যদি সামান্য পরিশ্রমেই শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাহলে এটি কিডনির কার্যকারিতার সমস্যা নির্দেশ করতে পারে। কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে অতিরিক্ত তরল জমতে পারে, যা ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করে।

৭. ত্বকে র‍্যাশ ও চুলকানি

যখন কিডনি ঠিকমতো বর্জ্য অপসারণ করতে পারে না, তখন শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমে যায়, যা ত্বকে চুলকানি, শুষ্কতা এবং র‍্যাশের কারণ হতে পারে।

৮. মুখে ধাতব স্বাদ ও ক্ষুধামন্দা

কিডনির সমস্যার কারণে রক্তে বিষাক্ত পদার্থ জমে যেতে পারে, যা মুখে ধাতব স্বাদ সৃষ্টি করে এবং খাবারের প্রতি অরুচি তৈরি করতে পারে। অনেক সময় কিডনি সমস্যার কারণে ওজন হ্রাস পেতে পারে বা মাংসজাতীয় খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দিতে পারে।

কিডনিকে সুস্থ রাখার উপায়

যদি এই লক্ষণগুলোর কোনোটি দেখা যায়, তাহলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। কিডনি সুস্থ রাখতে যা করতে পারেন—

  • পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন
  • কম লবণ ও কম প্রসেসড খাবার গ্রহণ করুন
  • নিয়মিত রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন
  • অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ এড়িয়ে চলুন
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন
  • যদি ডায়াবেটিস বা কিডনি রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, তাহলে নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করান

কিডনি রোগ সাধারণত নিরবেই বিকশিত হয়, তাই প্রাথমিক লক্ষণগুলোর প্রতি মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যদি উপরের লক্ষণগুলোর মধ্যে এক বা একাধিক লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো সতর্ক হলে দীর্ঘমেয়াদে কিডনি ভালো রাখতে পারবেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular