বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম অব্যাহতভাবে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন।
স্বর্ণের দামে উত্থানের কারণ কী?
বিশ্বের শীর্ষ ব্যাংক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্বাভাস অনুসারে, মার্কিন নীতি, বাণিজ্যযুদ্ধ, এবং ডি-ডলারাইজেশন প্রক্রিয়ার কারণে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ছে। সিটি ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হলে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের রিজার্ভ বাড়াতে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকবে। ফলে স্বর্ণের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (WGC) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক স্বর্ণের চাহিদা ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে রেকর্ড ৪,৯৭৪.৫ টনে পৌঁছেছে। বিশেষ করে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে বাজারে স্বর্ণের সরবরাহ কমে যাচ্ছে, যা দাম বাড়ানোর অন্যতম কারণ।
২০২৫ সালে স্বর্ণের বাজার কেমন হবে?
আন্তর্জাতিক বাজার গবেষণা সংস্থা ট্রেডিং ইকোনোমিকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত স্বর্ণের দাম উর্ধ্বমুখী থাকবে। চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২,৯৩৯ ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে তারা পূর্বাভাস দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ম্যাককুয়ারির মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য নীতির পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করবে স্বর্ণের ভবিষ্যৎ মূল্য। তবে স্বল্পমেয়াদে স্বর্ণের বিনিয়োগ লাভজনক হতে পারে বলে তারা মনে করছে।
বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সম্প্রতি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ১,৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১,৪৯,৮১২ টাকা নির্ধারণ করেছে। দেশের বাজারেও আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব পড়ছে, ফলে স্বর্ণের দর আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যারা স্বর্ণ কিনতে বা বিনিয়োগ করতে চান, তারা বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিলে লাভবান হতে পারেন। বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতি বছর স্বর্ণের বাজার আরও চমক দেখাতে পারে।