back to top
সোমবার, আগস্ট ১৮, ২০২৫
HomeInspirationMotivationসব কিছু যখন ভেঙে পড়ছে, তখন কীভাবে নিজেকে ধরে রাখবেন?

সব কিছু যখন ভেঙে পড়ছে, তখন কীভাবে নিজেকে ধরে রাখবেন?

রাত ২টা। চারপাশে নিস্তব্ধতা। একটা কমন ঘর, এক কোণে বসে থাকা একজন তরুণ। মোবাইলের আলোয় সে গুগল করছে—“How to stay motivated when nothing is working?”

এই দৃশ্যটা হয়তো আপনিও নিজের জীবনে একবার না একবার অনুভব করেছেন।

একটা সময় আসে, যখন কেউ বোঝে না আপনি কতটা চেষ্টা করছেন। কেউ দেখে না আপনি রাতে ঘুম না দিয়ে কীভাবে নিজের স্বপ্ন আঁকছেন। সেই সময়, বাইরের শব্দ বন্ধ হয়ে যায়। শুধু ভেতর থেকেই ভেসে আসে একটুকু প্রশ্ন—

“আমি কি হাল ছেড়ে দেব?”

এই লেখাটা সেইসব সময়ের জন্য—যখন কেউ নেই, কিন্তু আপনাকে থেমে গেলে চলবে না।

চারপাশে সবার সাফল্য, আর আপনার মনে হচ্ছে—“আমি পিছিয়ে যাচ্ছি”

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই দেখি, কেউ ফ্রিল্যান্সিংয়ে লাখপতি, কেউ বিদেশে পড়তে গেল, কেউ স্টার্টআপ শুরু করেছে।

আর আপনি? হয়তো চাকরির জন্য ঘুরছেন, ব্যবসায় লোকসান করছেন, বা ঘরে বসে নিজের স্বপ্ন নিয়ে লড়ছেন।

এই তুলনা-ভরা সময়েই সবচেয়ে বেশি দরকার—নিজেকে নিজের মতো করে দেখা।

আপনি ফুল হলে, অন্য কারও আগুনের সঙ্গে তুলনা করে লাভ নেই।

ব্যর্থতা মানে আপনি শেষ না, মানে আপনি চেষ্টা করছেন

একটা গল্প বলি।

কুমিল্লার ফাহিম, তিনবার বিসিএস পরীক্ষায় ফেল করেন। চারপাশের মানুষ বলতে শুরু করে—“তুই দিয়ে হবে না।”

কিন্তু সে একদিন নিজের ডায়েরিতে লিখলো—

“আমি একটা ফলাফল না, আমি একটা চেষ্টা।”

চতুর্থবার—সে টপ র‍্যাঙ্ক করে প্রশাসনে যোগ দেয়।

ফাহিমের মতো আরও হাজারও তরুণ আছেন, যারা হেরেছেন, কিন্তু থামেননি।

কারণ, সফলতা আসার আগেই ব্যর্থতা এসে দেখে নেয়—“তুমি প্রস্তুত তো?”

একাকীত্ব মানে আপনি শক্তিশালী হতে শিখছেন

বন্ধুরা ব্যস্ত, পরিবার বুঝছে না, সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে, কেউ কাছে নেই—এই সময়টাই সবচেয়ে বেশি কষ্টের।

কিন্তু এই সময়টাই সবচেয়ে বহুমূল্যবান।

এই সময়েই আপনি শিখবেন—

  • নিজের চিন্তা শুনতে
  • নিজের ইচ্ছের দায়িত্ব নিতে
  • কারো উপর না ভর করে দাঁড়াতে

দেখবেন, যেদিন আপনি নিজেই নিজের সাহস হবেন, সেদিন কেউ আপনাকে থামাতে পারবে না।

“মোটিভেশন” বলতে কিছু নেই—আছে ডিসিপ্লিন

সফল মানুষদের গোপন কথা কী?

তারা সবসময় মোটিভেটেড না। কিন্তু তারা ডিসিপ্লিনড।

উদাহরণ—

  • লেখকরা প্রতিদিন লেখেন, যেদিন ভালো লাগে না—সেদিনও।
  • ক্রীড়াবিদরা প্র্যাকটিস করেন, যেদিন ক্লান্ত থাকেন—সেদিনও।
  • উদ্যোক্তারা কাজ চালিয়ে যান, যেদিন লাভ হয় না—সেদিনও।

আপনাকেও সেটাই করতে হবে।

মোটিভেশন কখনো কখনো আসবে, কিন্তু অভ্যাস থাকলে সাফল্য থেমে থাকবে না।

বাস্তব জীবনে নিজেকে মোটিভেট রাখার ৫টি উপায়

১. মোবাইল থেকে ১টি মোটিভেশনাল কোট ছবি রাখুন

হোমস্ক্রিনে রাখুন আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি লাইন।

যেমন: “Stay loyal to your future, not your past.”

২. প্রতিদিন নিজের করা একটি ভালো কাজ লিখুন

হোক সেটা ঘর পরিষ্কার, কারো পাশে দাঁড়ানো, বা কিছু শেখা—লিখে ফেলুন। এটা আপনাকে দেখাবে আপনি অলস নন, আপনি তৈরি হচ্ছেন।

৩. ১ ঘণ্টা ‘শান্তি সময়’ রাখুন

নিজের মতো করে ১ ঘণ্টা রাখুন—মিউজিক, হাঁটা, বই পড়া, মেডিটেশন। বাইরের দুনিয়াকে দূরে রাখুন।

৪. একজন “চুপচাপ সাপোর্টার” খুঁজে নিন

হতে পারে বন্ধু, ভাই, বড় বোন—যে শুধু বলবে, “তুই পারবি।” এমন একজন থাকলে লড়াইটা সহজ হয়।

৫. নিজেকে বলুন—“আরো ৫ মিনিট চেষ্টা করি”

একেবারে থেমে যাবার সময়, নিজেকে বলুন—“আর ৫ মিনিট চেষ্টা করি।” এই ৫ মিনিট একদিন আপনার গেমচেঞ্জার হয়ে যাবে।

গল্প শেষ নয়—শুরু এখান থেকেই

আজ আপনি হয়তো ক্লান্ত, হয়তো হেরে গেছেন, হয়তো কেউ নেই পাশে।

কিন্তু মনে রাখবেন—

“আপনার সবচেয়ে অন্ধকার সময়টাই, আপনার আলো জন্মানোর সময়।”

আপনার ভেতরে একটা আগুন আছে—যেটা বাইরের কেউ দেখছে না। কিন্তু সেটাই একদিন এমন আলো দেবে, যা সবাই দেখতে বাধ্য হবে।

 আজই শুরু করুন—নিজেকে নিজের সেরা সঙ্গী বানানো

  • একটু লিখুন নিজের অনুভূতি
  • একটু সময় দিন নিজেকে বুঝতে
  • একটু শেখা শুরু করুন যা আপনার কাজে লাগবে

আপনি যদি নিজেকে ভালোবাসেন, নিজের পেছনে দাঁড়ান—দুনিয়া আপনাকে ঠেকাতে পারবে না।
কারণ, যারা নিজের ভেতরের যুদ্ধ জেতে, তারাই বাইরের দুনিয়ায় জয় পায়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular