back to top
শনিবার, জুন ১৪, ২০২৫
HomeProductivityCareer Developmentক্যারিয়ারে আটকে গেছেন? এই ৬টি বাস্তব অভ্যাস আপনার চিন্তা বদলে দেবে

ক্যারিয়ারে আটকে গেছেন? এই ৬টি বাস্তব অভ্যাস আপনার চিন্তা বদলে দেবে

“ভাই, তুমি তো দিনরাত ব্যস্ত থাকো, নিজের জন্য কিছু করো?”

বন্ধুর কথাটা শুনে আমি থমকে গেছিলাম। হ্যাঁ, চাকরি করছি। সময়মতো অফিসে যাচ্ছি, মিটিং করছি, কাজ ডেলিভার করছি। কিন্তু আসল প্রশ্নটা হলো—এইসবের বাইরেও কি আমি নিজের ক্যারিয়ারের দিকে কাজ করছি?

আমার মতোই হয়তো আপনি অনেকেই আছেন, যারা অফিসের রুটিনে আটকে গেছেন। উন্নতির চিন্তা করেন, কিন্তু জানেন না শুরু করবেন কোথা থেকে বা কিভাবে। চলুন, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা বলি—যা আপনাকে বাস্তবভাবে ক্যারিয়ারে ফোকাসড হতে সাহায্য করতে পারে।

১. সবকিছুর আগে নিজের জন্য পরিষ্কার লক্ষ্য ঠিক করুন

আমি যখন প্রথম চাকরি শুরু করি, তখনো জানতাম না আসলে আমি কী শিখতে চাই, কোন জায়গায় নিজেকে দেখতে চাই। যা সামনে আসছিল, তা-ই করছিলাম।

কিন্তু একসময় বুঝলাম—এভাবে চললে উন্নতি হবে না। তখন নিজের জন্য ছোট একটা প্ল্যান বানালাম:

“আগামী ১ বছরে আমি কী কী শিখব? কোন স্কিলে দক্ষতা অর্জন করব? কীভাবে সেটা আমাকে ভালো সুযোগের দিকে নিয়ে যাবে?”

রিয়েল টিপস:

  • মোবাইল বা নোটবুকে লিখে ফেলুন, ৬ মাস বা ১ বছরের লক্ষ্য।
  • একসাথে অনেক কিছু করতে যাবেন না। ১টা স্কিল/লক্ষ্যে ফোকাস করলেই যথেষ্ট।

২. সময় নেই—এ অজুহাত কাজ করে না

আগে ভাবতাম, “সময় পাই না।” কিন্তু পরে বুঝেছি, আসলে আমি সময় বের করিনি।

আমি TikTok বা Facebook-এ দিনে ২ ঘণ্টা কাটিয়ে দিতাম—অথচ ৩০ মিনিটে একটা YouTube টিউটোরিয়াল দেখে শেখা যেতো।

কী করলাম:

  • স্ক্রিন টাইম ট্র্যাক করলাম
  • রাতে ঘুমানোর আগে ৩০ মিনিট শেখার সময় রাখলাম
  • ছুটির দিনে ১-২ ঘণ্টা পড়াশোনার সময় নির্দিষ্ট করলাম

ধীরে ধীরে এটা অভ্যাসে পরিণত হল।

৩. স্কিল শেখার চাপে না পড়ে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শেখা

আমরা অনেক সময় ভাবি—“সব কিছু শিখতে হবে”, কিন্তু আসলে দরকার হয় প্রাসঙ্গিক কিছু শেখা।

আমি যখন মার্কেটিংয়ের দিকে কাজ করতে শুরু করি, তখন Data Analysis বা GA4 শিখেছি। Design বা ভিডিও এডিটিং শেখা জরুরি ছিল না তখন।

প্র্যাকটিক্যাল হ্যাক:

  • চাকরির JD (Job Description) দেখে স্কিল লিস্ট তৈরি করুন
  • সেই অনুযায়ী কোর্স বা ভিডিও খুঁজে শিখুন
  • LinkedIn বা কাজের সাইটগুলো দেখে কোন স্কিল ডিমান্ডে আছে খেয়াল রাখুন

৪.  কারো থেকে শেখা, নিজেকে একা না ভাবা

প্রথম দিকে ভাবতাম, সব একা একা শিখে ফেলব। কিন্তু পরে বুঝেছি, একটা ছোট টিপস বা কারো ফিডব্যাক অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা:

  • একজন সিনিয়রকে জিজ্ঞেস করলাম, “এই ক্যারিয়ার ট্র্যাকে কোন জিনিসটা শিখলে কাজের দেবে?”
  • তিনি বললেন, “Presentation skill বাড়াও, client handling শিখো”
  • তার পরামর্শেই আমি Toastmasters ক্লাবে জয়েন করি

৫. আত্মবিশ্বাস গড়তে হলে ছোট সাফল্য দরকার

আপনি যদি প্রতিদিন নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন—even in small ways—it boosts confidence.

যেমন:

  • একটা কোর্স শেষ করা
  • নিজের কাজের ওপর একটা ব্লগ লেখা
  • LinkedIn-এ নিজের শেখার জার্নি শেয়ার করা

এই ছোট ছোট জিনিসগুলো বড় ইম্প্যাক্ট ফেলতে পারে।

৬. ক্লান্ত লাগবে, বিরক্ত লাগবে—এইটাই নরমাল

সবসময় মোটিভেশন থাকবে না। মাঝে মাঝে মনে হবে, “এসব করে কি হবে?”

আমার ও হয়—বিশেষ করে যখন অফিসের কাজ অনেক বেশি হয় বা রেজাল্ট আসে না।

তখন নিজের আগের অর্জনগুলো মনে করি, টুকে রাখা লক্ষ্যগুলো পড়ে দেখি।

একটা কথা বিশ্বাস করি: “নিজেকে জিতিয়ে দিতে না পারলে, কেউ আপনাকে জেতাবে না।”

ক্যারিয়ারে উন্নতি চাইলে আগে নিজেকে সময় দিতে শিখুন। নিজেকে বুঝুন, নিজের সময়কে মূল্য দিন, শেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন, আর নিজের পাশে থাকুন।

সফল ক্যারিয়ার একদিনে হয় না। কিন্তু প্রতিদিন ১টা ভালো সিদ্ধান্ত, আপনাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular