সবাই জীবনে সফলতা অর্জন করতে চায়, তা সে যেই অবস্থায় থাকুক না কেন। আমরা সবাই জীবনে এমন কিছু যোগ করতে চাই যা আমাদের জীবনকে সুন্দর করবে। সফল মানুষদের গল্পগুলো থেকে কিভাবে নিজের স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তর করতে হয় আমরা সেই শিক্ষাই পাই এবং বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বজুড়ে স্টার্টআপগুলোর মাধ্যমে নিজের স্বপ্নগুলো সফল করার পথ বেছে নিচ্ছে অনেক উদ্যমী তরুণ।
এই আর্টিকেলে আমি জানাবো বিখ্যাত কিছু স্টার্টআপ কীভাবে শুরু হয়েছিলো। আশা করি এটি আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে যা আপনার নিজের স্বপ্নের রাস্তায় এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
এছাড়াও পড়তে পারেনঃ সফল হতে এড়াতে হবে যে বিষয়গুলো

Kevin Systrom নামে একজন ব্যাক্তি প্রোগ্রামিং কোড শিখতে চাইছিলো, সে সিদ্ধান্ত নিল তার কাজের সময়ের পর নিজে নিজে শিখবে এবং সেই ইচ্ছা থেকেই সে কিছু মোবাইল অ্যাপ নিয়ে কাজ করা শুরু করলো। ফলাফল, সে Instagram নামে একটা ফটো অ্যাপ স্টোরে আপলোড করে সোমবার, যা কিনা ঠিক পরেরদিন মঙ্গলবারেই অ্যাপ স্টোরে জনপ্রিয় হয়ে যায়।
Uber

একজন স্কুল ড্রপ আউট তার একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা শুরু করে। কিন্তু অবৈধ লাভ গ্রহনের কারণে তাকে বেশ বড় অংকের জরিমানা দিতে হয়েছিলো। এর পরও তার নতুন কিছু করে দেখানোর স্বপ্ন এবং সাহস শেষ হয়ে যায়নি। ২০১০ সালে সে Uber নামে নতুন প্রকল্প শুরু করে যার জন্য সে অর্থায়ন পায় এবং বর্তমানে এর মূল্য প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার।
Alibaba

Jack Ma নামে একজন ব্যাক্তি যে কিনা তার কর্ম জীবনে প্রায় সবরকম চেষ্টা বিফলে গিয়েছিলো, ইংলিশ জানতোনা বলে তার অনেক কষ্ট করতে হয়েছিলো, এমনকি বলার মত তার এমন কোন বড় যোগ্যতাও ছিল না। কিন্তু এসবকিছুর পরও তার নিজস্ব চিন্তা থেকে তৈরি করা প্রতিষ্ঠান যার নাম “আলিবাবা”, ব্যাবসাক্ষেত্রে পৃথিবীকে এক নতুন ধারনা দেয়।

একজন ব্যাক্তি সামাজিক মাধ্যমের এমন একটি ধারনা থেকে কাজ শুরু করে যা কিনা শুধুমাত্র প্রফেশনাল কাজে লাগবে এমন মানুষদের সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হবে। শুরুতে সে তার পরিচিত ৩৫০ জন বন্ধুদের তার এই ওয়েবসাইটে জয়েন করায়। ২০০৩ সালে যখন সে আনুষ্ঠানিকভাবে LinkedIn শুরু করে তখন সকলেই তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় এবং বর্তমানে তার এই সম্পদের মূল্য ১ বিলিয়ন ডলারের বেশী।

একজন ব্যাক্তি চাকরী ছেড়ে দিয়ে তার আরও দুইজন বন্ধুর সাথে কাজ করা শুরু করে। তারা বেশ কিছু মোবাইল অ্যাপ বানায় যার যার কোনটাই কোন জনপ্রিয়তা পায়নি। কিন্তু তারা নতুন কিছু চিন্তা করা থামিয়ে দেয়নি। তারা নতুন কিছু করার চিন্তা এবং গবেষণা বাড়িয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে ২০১০ সালে Pinterest তৈরি করে যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ২৫ মিলিয়নেরও বেশী মানুষ ব্যবহার করে।
Airbnb

দুইজন বন্ধু তাদের বাসা ভাড়া দিতে পারছিল না তাই তারা তাদের বাসায় অন্য মানুষদের থাকতে দিত যারা অল্প সময়ের জন্য বিভিন্ন কাজে আসতো এবং তাদের কাছ থেকে ভাড়া নিত। এতে যারা থাকতো তাদের হোটেলের মত এতো খরচ হতো না এবং দুইবন্ধু সময়মত তাদের বাসা ভাড়া দিতে পারতো।
তাদের এই আইডিয়া দ্রুত চারপাশে ছড়িয়ে পরে এবং তারা ১১২ মিলিয়ন ডলার অনুদান পায় এই আইডিয়া এর উপর আরও বড় পরিসরে কাজ করার জন্য।
Angry Birds

৩ জন ব্যাক্তি ৫১টি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে যার জন্য তারা কোন সফলতাই পায়নি এবং তারা প্রায় হাল ছেড়ে দিচ্ছিল যে তাদের দিয়ে কিছুই হবে না। তাদের ৫২ তম অ্যাপটি ছিল Angry Birds নামে একটি গেম যা ইতিহাস তৈরি করলো এবং তাদের জীবন পরিবর্তন করে দিল।
এই স্টার্টআপ গুলোর বিস্তারিত ঘটনা আপনারা অনলাইন থেকে জেনে নিতে পারবেন কিন্তু ছোট এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো, আমরা কেউই আমাদের ভবিষ্যতে ঠিক কি হতে যাচ্ছে তা ঠিক করে বলতে পারি না এবং ঠিক কোন মুহূর্তে আমাদের জীবনে ভালো পরিবর্তন আসবে সেটা ধারনা করতে পারবো না। কিন্তু যা করতে পারবো সেটা হলো হাল না মেনে এগিয়ে যাওয়া এবং নিজের যোগ্যতা আরও বাড়ানো। এই মানসিকতাই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে এবং সফল হতে সাহায্য করবে।